গুজব উফেক্ষা করে ঢাকার বই মেলায় ইস্কনের স্টলে মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড় ( ভিডিও )! - বৈদিক আপডেট

Home Top Ad

Post Top Ad

Monday, February 17, 2020

demo-image

গুজব উফেক্ষা করে ঢাকার বই মেলায় ইস্কনের স্টলে মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড় ( ভিডিও )!

ইস্কন একটি আন্তর্জাতিক সনাতন ধর্মের সংগঠন। ইস্কনের পূর্ণ রূপ হলো ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ।১৯৬৬ সালে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। নিজে কৃষ্ণ ভক্ত হওয়ায় তিনি শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিমা দেশে গমন করেন। একেবারে শূন্য হাতে তিনি জাহাজে করে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটিতে পৌঁছান। শুরু করেন কৃষ্ণনাম। পান ব্যাপক সারা। আমেরিকার মানুষ দলে দলে কৃষ্ণ নামে অবিভূত হয়ে আসতে থাকে সনাতনের ছায়াতলে। ঐ সময়ে আমেরিকার মেইনস্ট্রিম টেলিভশন, সংবাদপত্রে প্রভুপাদের
86266613_817298925362308_1772739067000127488_o
ঢাকার বই মেলায় ইস্কনের স্টলে মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড়

সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়ে থাকে। ইস্কন তখন পশ্চিমা বিশ্বে এতোটায় জনপ্রিয়তা লাভ করে যেন  পশ্চিমা বিশ্ব পেলো এক নতুন ধর্মগুরু। আমেরিকা থেকে ইস্কন ছড়াতে থাকে ইউরোপ অস্ট্রেলিয়া রাশিয়াসহ সব জায়গায়। এর মধ্যে ঐ সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ড দ্যা বিটলেস এর কর্ণধার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পশ্চিমা সঙ্গী জর্জ হ্যারিসন প্রভুপাদের সংস্পর্শে সনাতন ধর্মের ছায়াতলে আসেন। তিনি শ্রীকৃষ্ণ ও সনাতন ধর্ম নিয়ে গান বিশ্বময় ছড়িয়ে দেন। তিনি আজীবন ইস্কনের সদস্য ছিলেন এবং মৃত্যুর পর তার সম্পদের অর্ধেক ইস্কনের নামে লিখে দিয়ে যান। তার সেই সম্পদ থেকে ইস্কনের ফুড ফর লাইফ প্রোগ্রাম চলে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীর কোটি কোটি গরিব মানুষের মুখে পরে ফ্রি খাবার। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ইস্কন এগিয়ে আসে। হরে কৃষ্ণ ফুড ফর লাইফ ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও তা বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারিত করা হয় ১৯৯৫ সালে। ইস্কনের কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য সাহায্য : 2015 - নেপালে 2015 সালে ভূমিকম্প এর সময় 100,000 জনকে খাবার প্রদান করা হয়! 2013 - জীবনের জন্য খাদ্য!তাই ভারতে ঘূর্ণিঝড় Phailin এবং ফিলিপাইনে টাইফুন হাইয়ানএর সময় খাদ্য ত্রাণ প্রদান করা হয়। 2008 - দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন গুস্তাভ এবং হারিকেন Ike এর সময় "হরে কৃষ্ণ ফুড ফর লাইফ" রান্না করা খাবার পরিবেশিত করে !
86459921_10219151513930640_749365041739857920_o
ঢাকার বই মেলায় ইস্কনের স্টলে মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড়

 2007 - বাংলাদেশে ২০০৭ সালে হারিকেন ঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কয়েক হাজার মানুষের মাঝে ইস্কন ফ্রি খাবার বিতরণ করে। 2005 - পাকিস্তানে ভূমিকম্পের পর খাদ্য লাইফ স্বেচ্ছাসেবীরা স্থানীয় সামরিক ও পুলিশ সঙ্গে একযোগে খাবার পানি, খাদ্য, তাঁবু ও কম্বল বিতরণ করে ! 2005 - যখন হারিকেন কাটরিনা মারাত্মক আঘাত হানে, উপসাগরীয় কোস্ট এ, "হরে কৃষ্ণ ফুড ফর লাইফ" এর স্বেচ্ছাসেবীরা ফ্লোরিদা, মিসিসিপি এবং টেক্সাস এর দরিদ্র পরিবারের দৈনিক 800 প্লেট রান্না করা খাবার পর্যন্ত বিতরণ করে ! 2004 - 2005 একটি হত্যাকারী সুনামির ফলে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, প্রায় 200,000 মানুষের মৃত্যুরঘটে ! তখন এবং ভারত ও শ্রীলংকায় "হরে কৃষ্ণ ফুড ফর লাইফ" এর স্বেচ্ছাসেবীরা দৈনন্দিন খাবার, হাজার হাজার মানুষকে চিকিৎসা, পোশাক বিতরণ করে। 1990 - খাদ্য স্বেচ্ছাসেবীরা, চেচনিয়া, বসনিয়া ও আবখাজিয়া অঞ্চলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভাবগ্রস্ত মানুষকে খাদ্য বিতরণ করে। বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানে রমজানের সময় বিভিন্ন ইস্কন মন্দিরে ফ্রি প্রসাদ/ইফতারি দেয়া হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে আইলা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্হদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দে ইস্কন।
13524344_849627591848792_7794050113141738034_n
ইসকনের মূল ধর্মবিশ্বাসটি শ্রীমদ্ভাগবত ও ভগবদ্গীতা গ্রন্থদ্বয়ের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভক্তিযোগ এই সংগঠনের মূল উপজীব্য। স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণকে তুষ্ট করাই এই প্রতিষ্ঠানের ভক্তদের জীবনের মূল লক্ষ্য বলে বিবেচিত হয়।
২০০৯ সালের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে সারা বিশ্বে ইসকনের ৫০০০০ টিরও বেশি মন্দির এবং কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি খামার সংগঠন (কয়েকটি স্বনিযুক্তি প্রকল্প সহ), ৫৪টি বিদ্যালয় ও ৯০টি ভোজনালয়। ইস্কনের রয়েছে অনেকগুলো হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে পূর্ব ইউরোপে (সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর) ও ভারতে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্পূর্ণ মানবতাবাদী সংগঠন হয় সত্ত্বেও বাংলাদেশের মৌলবাদীরা সম্প্রতি ইস্কনের নামে গুজব ছড়িয়ে অশান্ত করে তুলেছে বাংলাদেশকে। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল, সোস্যাল মিডিয়া ও কিছু মৌলবাদী পত্রিকা ব্যবহার করে তারা ছড়াতে থাকে এই সব গুজব। বিভিন্ন হত্যার আসামিকেও ইস্কন সদস্য বলে ট্যাগ দেয়া শুরু হয়। এই অবস্থায় নড়েচড়ে বসে ইস্কন। তারা সংবাদ সম্মেলন করে তাদের অবস্থান তুলে ধরে। এইসব মৌলবাদী মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে সরকারের কাছে নিরাপত্তা চায়। এরই মধ্যে বাংলাদেশে নিরাপত্তা সংকটে পরে ইস্কন।ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্টে বেরিয়ে আসে ইস্কনের উপর জঙ্গি হামলা গোয়েন্দা রিপোর্ট যা ভারতের বিখ্যাত আনন্দ বাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গে ইস্কন মন্দিরে বোমা হামলা হয় যা বিবিসি বাংলার হেডলাইনে প্রকাশিত হয়। দিনে দুপুরে হামলা হয় সিলেটের ইস্কন মন্দিরে। এরপর সরকার ইস্কনের উপর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী জঙ্গিদের গ্রেফতার করে। গত ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০ বাংলা ট্রিবিউন  রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসকন মন্দিরে জঙ্গী হামলার পরিকল্পনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ। এই ৫ জঙ্গীর মধ্যে একজন ছিল মেডিকেল স্টুডেন্ট। বোঝাই যাচ্ছে ইস্কনের বিরুদ্ধে গুজবের শিকড় কতদূর বিস্তার করেছে। ইস্কন বাংলাদেশের মিডিয়া সেন্টার গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক তথ্য প্রকাশ করতে থাকে।
13450964_849627555182129_1734517359044533462_n

ইস্কনে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে ! এবছর (২০২০) ঢাকার বই মেলায় একটি স্টল দেয়। ইস্কনের স্টল নম্বর ৭৪। সেখানে মানুষের বিশেষ করে টুপি পড়া মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। তারা ইস্কনের বিভিন্ন বই কিনে ইস্কন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে। আপনিও আসুন, বই পড়ুন - ইস্কন নামের মানবতাবাদী সংগঠন সম্পর্কে জানুন।
ঢাকার বই মেলায় ইস্কনের স্টলে মৌলবীদের উফচে পড়া ভিড়ের  ভিডিও :


No comments:

Post a Comment

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

Post Bottom Ad

অফবিট

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *