এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আপনাকে কিছুটা ব্রেনস্ট্রোম করতে হবে।
ভাবুনতো বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে শিখা অনির্বাণে কন্টিনিউয়াস আগুন জ্বালাতে কত টাকা খরচ হয় ?
ভাবুন তো পৃথিবীতে ক্রিসমাস সিজনে কতগুলো ক্রিস্টমাস ট্রি কাটা হয় ?
বলুন তো পৃথিবীতে "থ্যাংক্সগিভিং ডে" তে কতগুলো টার্কি নির্বিচারে হত্যা করা হয় ?
আপনি জানেন কি আমেরিকায় প্রতিদিন কি পরিমান খাবার নষ্ট হয় ?
প্রতিদিন নামাজ পড়ার জন্য কি পরিমান বিদ্যুৎ খরচ হয় ?
এর একটারও উত্তর আপনার সম্ভবত জানা নেই। তাই মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে আপনার ব্রেনকে একটু চিন্তিত করে নিলাম। পড়তে থাকুন উত্তর পেয়ে যাবেন।
![]() |
শিবলিঙ্গে দুধ ঢালছেন বলিউড সুপারস্টার হৃতিক রোশন |
এছাড়াও বেদান্ত অনুসারে তিনিই মহা ঈশ্বর । শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে বলা হয়েছে - "যদাহতমস্তন্ন দিবা ন রাত্রির্নসন্ন চাসচ্ছিব এব কেবলঃ।"
অর্থাৎ যখন আলো ছিল না, অন্ধকারও ছিল না; দিন ছিল না, রাত্রিও ছিল না; সৎ ছিল না, অসৎ ও ছিল না- তখন কেবলমাত্র ভগবান শিবই ছিলেন।
শিবের মাথায় দুধ দেয়া হয় কেন ?
সমুদ্র মন্থনের সময় হলাহল নামক মারাত্মক বিষ উত্থিত হয়েছিল, যেটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল জীবের জীবন বিপন্ন করার সম্ভবনা ছিল অত্যধিক। ভগবান শিব সকল দেবতাদের অনুরোধে এই মারাত্মক বিষ থেকে সবাইকে রক্ষা করার ঐশ্বরিক দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব সম্পন্নের জন্যই তিনি সমস্ত বিষ পান করে তার কন্ঠে সংরক্ষণ করে রেখে দেন। আর এজন্যই মহাদেবের কণ্ঠদেশ নীলবর্ণ বলে ধারণা করা হয় ।
হলাহল বিষের বিষাক্ততা মাত্রা ছিল প্রচণ্ড রকমের বেশি, যদিও এটি ভগবান শিবের উপর কোন প্রভাব ফেলে নাই। কিন্তু হলাহল বিষের তাপমাত্রা ছিল অসম্ভব বেশি। এই তাপমাত্রার প্রভাব প্রশমিত করার জন্য দেবতারা মহাদেবের জন্য গঙ্গা অভিষেক করেন, আর এই গঙ্গা অভিষেকের মাধ্যমে দেবতারা শিবকে প্রসন্ন করেছিলেন। ভগবান শিবের সেই গঙ্গা অভিষেকে শুধুমাত্র সাপ এগিয়ে এসেছিল এই ঐশ্বরিক কারণ সমর্থনের জন্য। তারা নিজেরাও বিষের কিছু অংশ পান করে ও তাদের বিষদাঁতে কিছু বিষ গ্রহণ করে। এজন্য সেদিন থেকেই কিছু সাপ বেশি বিষাক্ত হয়ে ওঠে।
সমুদ্র মন্থনের সময় যে গঙ্গা অভিষেক করা হয়েছিল, শিবের উপাসকদের দ্বারা শিবলিঙ্গে জল বা দুধ ঢালার কারণ হচ্ছে শিবের প্রতি ভক্তদের ভক্তি ও ভালোবাসা প্রতিভাস (প্রকাশ) করার জন্য।
শিবের পূজায় শিবলিঙ্গে এরকম জল বা দুধ ঢালা খুবই গুরুত্বপূর্ণ; অভিষেক ছাড়া শিবের পূজা অসম্পূর্ণ। অভিষেকের সময় এই জল বা দুধ ঢালা খুবই পবিত্র। কারণ অভিষেকের দ্বারাই শিবের প্রতি ভক্তদের গভীর অনুরক্তি প্রকাশিত হয়, আর এর মাধ্যমেই ভক্তিপরায়ণতা ফুটে উঠে।
এখানে অনেকে বলে থাকে,
শিবলিঙ্গে দুধ ঢেলে দুধ অপচয় করা হচ্ছে, কিন্তু এটা মোটেও সঠিক কথা নয়। কারণ এই দুধের বেশ খানিকটা অংশ চরণামৃত বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এবং যা পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদরূপে বিতরণ করা হয়। তাই দুধ ঢালা কোনক্রমেই অপচয় নয়, বরং এটা নিষ্কলুষ ভক্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশ যেখানে নেই পর্যাপ্ত গ্যাসের মজুত, মোট জনসংখ্যার ১% লোকেরও গ্যাস ব্যবহার করার সামর্থ নেই। সেই দেশে "শিখা অনির্বাণ" "শিখা চিরন্তন" নামের বহু গ্যাসের মশাল জন্ম অবধি জ্বলছে। এর খরচের কোন পরিসংখ্যান সরকার প্রকাশ না করলেও এটা বুঝা খুব সামান্য ব্যাপার যে এটা খুব ব্যয়বহুল। (যারা গ্যাস ব্যবহার করেন তারা সারাদিন গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে দেখে এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে পারেন।)
পৃথিবীতে ক্রিসমাস সিজনে কতগুলো ক্রিস্টমাস ট্রি কাটা হয় ?
এবার আসি ক্রিস্টমাস ট্রি কাটা প্রসঙ্গে। ইউনাইটেড স্টেটস এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট ( USDA) এর তথ্য মতে ২০১৭ সালে আমেরিকায় ১৫.১ লক্ষ্য ক্রিস্টমাস ট্রি কাটা হয়। তাহলে ভাবুন তো সারা বিশ্বে কি পরিমান ক্রিস্টমাস ট্রি কাটা হয় ? শুধু ক্রিস্টমাসের সময় যত গাছ কাটা হয় সারা বিশ্বে বছরে তার তিন ভাগের এক ভাগ গাছ কাটা হয় না। কিন্তু এই লক্ষ্য লক্ষ্য গাছ কাটার ফলে আমাদের উপর কি প্রভাব পড়ছে ? বিশ্বে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO২) এর পরিমান বেড়ে যাচ্ছে, উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন এভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে অদূর ভবিষ্যতে উত্তর মেরুর বরফ গলে সাগরের জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অংশ, আমেরিকার সবচেয়ে দামি শহর ম্যানহাটনসহ অনেক গুলো রাজ্য, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ অনেক গুলো দেশ জলে নিন্মজিত হবে।
পৃথিবীতে "থ্যাংক্সগিভিং ডে" তে কতগুলো টার্কি নির্বিচারে হত্যা করা হয় ?
"থ্যাংক্সগিভিং ডে" মূলত পালিত হয় আমেরিকা ও কানাডায়। এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য অন্যকে ধন্যবাদ জানানো হলেও এর রয়েছে অন্য একটি কালো দিক। ফার্ম সাংচুয়ারী নামের একটি ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, "থ্যাংক্সগিভিং ডে"র দিনে ৪৬ মিলিয়ন টার্কি হত্যা করা হয়। আমেরিকান ইন্ডিয়ান বা রেড ইন্ডিয়ানদের মতে, এই দিবস পশ্চিমা মানুষ কতৃক রেড ইন্ডিয়ানদের হত্যা করার উৎসব। তাই এই দিনকে তারা কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত করে।
আপনি জানেন কি আমেরিকায় প্রতিদিন কি পরিমান খাবার নষ্ট হয় ?
২০১৮ সালের The Guadian এর তথ্য মতে, আমেরিকায় প্রতিদিন ১৫০,০০০ টন খাবার নষ্ট হয়। এই দেশের মোট জনসংখ্যা ৫০ কোটি। এর মানে দাঁড়ায় প্রত্যেক মার্কিন প্রতিদিন ১ পাউন্ড খাবার নষ্ট করেন। ১ পাউন্ড খাবারের এভারেজ মূল্য যদি ৫ ডলার হয় ১৫০,০০০ খাবারের মূল্য হয় ৭৫০,০০০ ডলার। অর্থাৎ বাংলা টাকায় প্রতিদিন ৬০,০০০,০০০ ( ৬০ লক্ষ) টাকার খাবার নষ্ট হয়। তাহলে বছরে কি পরিমান খাবার নষ্ট হয় ? কিন্তু উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, আমেরিকায় ২ থেকে ৫ লক্ষ হোমলেস বা গৃহহীন মানুষ রয়েছে।
প্রতিদিন নামাজ পড়ার জন্য কি পরিমান বিদ্যুৎ খরচ হয় ?
![]() |
শিবলিঙ্গে দুধ ঢালছেন কলকাতার মেয়র ফিহাদ হাকিম |
একবার নামাজ পড়লে ২ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। দিনে ৫ বার নমাজ পড়লে ১০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। ১ ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৭ টাকা হলে প্রতিদিন ৭০ ইউনিট বিদ্যুৎ নমাজ পড়া বাবদ খরচ হয় যার মূল্য ৭০X ১০= ৭০০ টাকা। বছরে (৭০০X ৩৬৫=২৫৫,৫০০ ) আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়। তাহলে সারা বিশ্বে নামাজ পড়া দরুন কত টাকা খরচ হয় ?
শিবরাত্রি বছরে একবার পালিত হয়। সেখানে ১ লিটার দুধ ঢাললে তার দাম ৪ টাকা মতো পড়ে।শিবলিঙ্গে দুধ ঢেলে দুধ অপচয় করা হচ্ছে, কিন্তু এটা মোটেও সঠিক কথা নয়। কারণ এই দুধের বেশ খানিকটা অংশ চরণামৃত বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এবং যা পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদরূপে বিতরণ করা হয়। তাই দুধ ঢালা কোনক্রমেই অপচয় নয়, বরং এটা নিষ্কলুষ ভক্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
আর কি উৎসবে অযথা খরচ হয় ?
যারা শিব লিঙ্গে দুধ ঢালাকে নিন্দা করেন তারা কি একবারও উপরোক্ত অনুষ্ঠান বা বিষয়গুলোর নিন্দা করেছেন ?
তাই উপরোক্ত তথ্যগুলো যাচাই করে হিন্দু ধর্মের একটি উৎসবকে হিংসা বা ঘৃর্ণা না করে সব ধর্ম বা কালচার কে রেস্পেক্ট বা সন্মান করতে শিখুন।
তথ্যসূত্রঃ Wikipedia, The Guadian , Farm Sanctuary, USDA
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।